অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কী?
মার্কেটিং হচ্ছে যে কোন পণ্য অথবা সার্ভিস এর প্রচার প্রচারনা করে ওই পণ্যের ক্রেতা তৈরি করা। ঠিক এই জিনিশটিই অনলাইনে করলে সেটাকে বলা হয় “ডিজিটাল মার্কেটিং” বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে খুব দ্রুত এবং কম খরচে অনলাইনে টাকা উপার্জন করার উপায়।
যখন “ডিজিটাল মার্কেটিং” ব্যাবহার করে নিজের কোন পন্য অথবা সার্ভিস বিক্রি বা প্রমোশন করলে সেটাকে বলা হয় ইন্টারনেট মার্কেটিং, আর যখন যখন “ডিজিটাল মার্কেটিং” ব্যবহার করে অন্য কারও পন্য অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করলে সেটাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অর্থাত, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে, অন্য কারো কোন পন্য অথবা সার্ভিস কমিশনের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া অথবা লিড পাইয়ে দেওয়া। বর্তমানে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস আছে যারা ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল প্রডাক্ট অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের প্রমোশনের মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রি করার সুযোগ করে দেয়। সহজ ভাবে বলা যায়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি জিনিশ যার মাধ্যমে প্রথমত আপনি কারো বা কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রমোট করবেন। এখন কোন ক্রেতা যদি আপনার দেয়া অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে ঐ পণ্য বা সেবা কেনেন, তাহলে আপনি একটি নিদ্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাবেন।
আর এই কমিশন আপনার কাছে পৌছে দেবে মার্চেন্ট অর্থাৎ যার পণ্য বিক্রি করছেন তিনি ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এক এক জন এক এক ভাবে করে থাকেন। প্রডাক্ট, টার্গেট মার্কেট এবং প্রমোশন স্ট্রেটেজির উপর ভিত্তি করে একেক জনের একেক ধরন থাকে। কেউ কেউ ডিরেক্ট পণ্য প্রমোট করে আবার কেউ কেউ রিভিউ বেসড ওয়েবসাইট তৈরি করে আবার অনেকে শুধু প্রডাক্টের ল্যান্ডিং পেজ তৈরি প্রমোট করে থাকে। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলেই প্রথমেই অনেক কিছু জানতে হবে। যেমন, কোন প্রডাক্ট বাছাই করবো, কেন বাছাই করবো? এই প্রডাক্ট গুলো কিভাবে উপস্থাপন করতে হবে এবং কিভাবে প্রমোট করতে হবে ইত্যাদি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলে কিছু কিছু জিনিশ জানতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিশ নির্বাচন, প্রোডাক্ট রিসার্স, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, কিওয়ার্ড রিসার্স, কন্টেন্ট তৈরি করা, ওয়েব সাইট তৈরির যাবতীয় ধারনা, ল্যান্ডিং পেজ বানানো, ইমেইল লিস্ট বানানো, লিংক বিল্ডিং, পেইড মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ইত্যাদি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অন্যতম মার্কেট প্লেস হচ্ছে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম, ক্লিক ব্যাংক, সিপিএ এম্পায়ার, শেয়ার এ সেল, কমিশন জাংশন ইত্যাদি
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং:
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য প্রচলিত অনেকগুলো মার্কেটপ্লেস থাকলেও অ্যামাজান অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকেই পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে রাখেন বেশিরভাগ মার্কেটার। কেননা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই কমার্স সাইট অ্যামাজন ডট কম (Amazon.com)। বিশ্বে সম্ভবত এমন কোন প্রোডাক্ট নেই যা অ্যামাজনে নেই। অ্যামাজনের লোগো তে A থেকে Z এ তীর চিনহ দিয়ে এই থিমটাই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আমেরিকায় প্রতি আট জনের মধ্যে একজন মানুষের অ্যামাজনে অ্যাকাউন্ট আছে। একজন মার্কেটার অ্যামাজনের পণ্যের বিক্রি বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারেন এবং তার মাধ্যমে যে বিক্রি হয় তা থেকে কমিশন হিসেবে আয় করতে পারেন। অ্যামাজনের অ্যাফিলিয়েটের কমিশন ৪ থেকে ৭.৫ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে
আয় করবেন যেভাবে:
বেশ কয়েকভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে কাজ শুরু করতে পারেন- সোশ্যাল সাইটে লিংকগুলো শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে, ল্যান্ডিং পেইজ তৈরির মাধ্যমে, ব্লগ সাইট বা ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো ওয়েবসাইট তৈরি করে কাজ করা। তবে গতানুগতিক ওয়েবসাইট থেকে এ ওয়েবসাইটের ধরন একটু আলাদা হবে। যখন আপনি অ্যামাজনের কোন প্রডাক্ট প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন এবং সেখানে আপনার নির্ধারিত প্রডাক্টের বর্ণনাসহ যখন সেটা বিক্রির উদ্দেশ্যে দিবেন, তখন আপনার ওয়েবসাইটটিকে বলা হবে অ্যামাজন নিশ সাইট। অ্যামাজনের নিশ সাইটে একটি ছোট বিনিয়োগের উপর বড় অংকের আয় করা সম্ভব। আর এটি যদি হয় প্যাসিভ ইনকাম তাহলে তো কথাই নেই। প্যাসিভ ইনকাম হলো এমন আয় যেখানে আপনি সরাসরি সম্পৃক্ত না থেকেও আয় করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি একটি নির্দিষ্ট সময় এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করে রাখবেন এবং পরবর্তীতে সক্রিয়ভাবে কাজ না করা সত্ত্বেও আপনি আয় করতে থাকবেন। অ্যামাজন নিশ সাইট নিয়ে কাজ করে অনেকেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। অনেকে মাসে কয়েক হাজার ডলারও ইনকাম করছে। 
নিশ সাইট থেকে আয় করবেন যেভাবে
নিশ সাইটের জন্য যা দরকারঃ  
১। কি-ওয়ার্ড রিসার্চ
২। একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করা ও হোস্টিং সেট আপ
৩। ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল
৪। মানসম্মত কনটেন্ট
৫। ভাল মানের ব্যাকলিংক তৈরি করা
৬। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
৭। দরকারি পেজ সেটআপ
৮। কাঙ্খিত কনভার্সন রে
আপনি প্রথমে ভালো কিওয়ার্ড রিসার্চ করে বিভিন্ন ফ্রি ব্লোগ খুলে কাজ চালু করতে পারেন। যেমন: blogger.com wordpreash.com ইত্যাদি আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top